আমাদের স্মার্টফোনে থাকে অনেক ব্যক্তিগত ও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য—ছবি, ভিডিও, ব্যাংক ডিটেইলস কিংবা নানা ধরণের পাসওয়ার্ড। কিন্তু আপনি জানেন কি, এই ডেটাগুলোর পেছনে লেগে আছে অসংখ্য সাইবার অপরাধী? তারা ম্যালওয়্যার নামক ক্ষতিকর সফটওয়্যার ঢুকিয়ে আপনার ফোনকে বানাতে পারে নজরদারির যন্ত্র।
ফোনে ম্যালওয়্যার ঢুকেছে কি না, তা বোঝার কিছু সুস্পষ্ট ইঙ্গিত রয়েছে। নিচে উল্লেখ করা হলো এমনই ৬টি লক্ষণ ও করণীয়—
১. হঠাৎ অজানা অ্যাপ ইনস্টল হওয়া বা বিজ্ঞাপনের হানা
আপনি কোনো অ্যাপ ইন্সটল না করলেও যদি ফোনে নতুন অ্যাপ দেখা যায় বা হঠাৎ হঠাৎ পপ-আপ বিজ্ঞাপনে ভরে যায় স্ক্রিন, তবে এটি হতে পারে ম্যালওয়্যারের কাজ।
প্রতিরোধ:
- অচেনা ও অপ্রয়োজনীয় অ্যাপ সঙ্গে সঙ্গে মুছে ফেলুন
- নতুন অ্যাপ ডাউনলোডের আগে রিভিউ পড়ুন ও পারমিশন যাচাই করুন
২. ফোন অতিরিক্ত গরম হওয়া ও ব্যাটারি দ্রুত শেষ হয়ে যাওয়া
সাধারণ ব্যবহারেও ফোনের ব্যাটারি দ্রুত ড্রেইন হলে বা ডিভাইস অতিরিক্ত গরম হয়ে উঠলে সেটিও ম্যালওয়্যারের প্রভাব হতে পারে। কারণ এসব সফটওয়্যার ব্যাকগ্রাউন্ডে চালু থাকে এবং শক্তি ব্যবহার করে।
৩. ডিভাইস হঠাৎ ধীর হয়ে যাওয়া
যদি ফোন আচমকা হ্যাং করে বা সব কাজ করতে সময় নেয়, তাহলে এটি হতে পারে RAM ও CPU-র অতিরিক্ত চাপের ফল, যা ম্যালওয়্যার তৈরি করতে পারে।
৪. কল বা ইন্টারনেট সংযোগে সমস্যা
কল করার সময় বারবার ডিসকানেক্ট হওয়া বা ইন্টারনেট বারবার বন্ধ হয়ে যাওয়া, এসবই ইঙ্গিত দিতে পারে ফোনে আড়ি পাতছে কেউ।
৫. অপ্রত্যাশিত অ্যাপ পারমিশন
কোনো অ্যাপ কেন আপনার ক্যামেরা, মাইক্রোফোন বা লোকেশন অ্যাকসেস চায়—সেটা বুঝতে হবে। অনেক ম্যালওয়্যার এমন পারমিশন চেয়ে গোপনে আপনার তথ্য চুরি করতে পারে।
করণীয়:
- Settings > Privacy > Permissions এ গিয়ে চেক করুন কোন অ্যাপ কী পারমিশন নিচ্ছে
- কোনো সন্দেহ হলে, সঙ্গে সঙ্গে সেই অ্যাপ রিমুভ করুন
৬. মোবাইল ডেটা হঠাৎ বেড়ে যাওয়া
আপনি নেট ব্যবহার না করলেও যদি ডেটা বেশি খরচ হয়, তাহলে সেটাও হতে পারে ম্যালওয়্যারের আলামত। এটি গোপনে আপনার তথ্য ইন্টারনেটের মাধ্যমে বাইরে পাঠাতে পারে।
কীভাবে রক্ষা পাবেন এই ডিজিটাল হুমকি থেকে?
- কেবলমাত্র বিশ্বস্ত ও অথেনটিক প্ল্যাটফর্ম থেকে অ্যাপ ডাউনলোড করুন
- ভালো মানের অ্যান্টিভাইরাস অ্যাপ ব্যবহার করুন
- নিয়মিত অ্যাপ ও পারমিশন রিভিউ করুন
- গোপন তথ্য স্ক্রিনশট না নিয়ে নিরাপদ অ্যাপে সংরক্ষণ করুন
স্মার্টফোন ব্যবহার এখন শুধু যোগাযোগ নয়, বরং পুরো ডিজিটাল লাইফস্টাইলের কেন্দ্রবিন্দু। তাই সতর্ক থাকাই আপনার সাইবার নিরাপত্তার সবচেয়ে কার্যকর অস্ত্র।