স্মার্টফোন এখন শুধু যোগাযোগের মাধ্যম নয়; এটি দৈনন্দিন জীবনের অপরিহার্য অংশ হয়ে উঠেছে। তবে নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ ও সঠিক ব্যবস্থাপনার অভাবে ফোনের কার্যক্ষমতা দ্রুত কমে যেতে পারে। ফ্ল্যাগশিপ কিংবা বাজেট মডেল—সব ধরনের স্মার্টফোন দীর্ঘদিন ভালো রাখতে কিছু সহজ কিন্তু কার্যকর কৌশল অনুসরণ করা জরুরি।
১. অপ্রয়োজনীয় অ্যাপ মুছে ফেলুন
অনেক সময় আমরা প্রয়োজন ছাড়াই ফোনে বিভিন্ন অ্যাপ ইনস্টল করে রাখি, যা স্টোরেজ দখল করার পাশাপাশি ব্যাকগ্রাউন্ডে চলতে থাকে এবং প্রসেসিং শক্তি ও ব্যাটারির ওপর বাড়তি চাপ ফেলে। তাই কিছুদিন পরপর অপ্রয়োজনীয় অ্যাপগুলো মুছে ফেলতে হবে। আর যেসব প্রি-ইনস্টল অ্যাপ মুছতে পারা যায় না, সেগুলো নিষ্ক্রিয় রাখা উচিত।
২. স্টোরেজ পরিষ্কার রাখুন
অপ্রয়োজনীয় ফাইল, অডিও-ভিডিও ও ডকুমেন্ট জমে ফোনের স্টোরেজ পূর্ণ হয়ে গেলে ডিভাইসের গতি কমে যেতে পারে। তাই নিয়মিত অপ্রয়োজনীয় ডাটা মুছে ফেলার পাশাপাশি ফাইল ম্যানেজার ব্যবহার করে স্টোরেজ অপটিমাইজ করা উচিত। দীর্ঘদিন ব্যবহারের পর ফোন ধীরগতির হয়ে গেলে ফ্যাক্টরি রিসেট করাও একটি কার্যকর উপায় হতে পারে।
৩. অ্যাপ ও সফটওয়্যার আপডেট করুন
স্মার্টফোনের সফটওয়্যার ও ইনস্টল করা অ্যাপগুলোর সর্বশেষ সংস্করণ ব্যবহার করা প্রয়োজন। কারণ, আপডেট ভার্সনে সাধারণত নিরাপত্তা বাড়ানো হয় এবং কর্মক্ষমতা উন্নত করা হয়। ফোনের ‘অটো-আপডেট’ অপশন চালু রাখা এবং নিয়মিত প্লে স্টোর থেকে অ্যাপ আপডেট করা গুরুত্বপূর্ণ।
৪. সুরক্ষিত কভার ও স্ক্রিন প্রটেক্টর ব্যবহার করুন
হাত ফসকে পড়ে গেলে কিংবা পানির সংস্পর্শে এলে স্মার্টফোনের হার্ডওয়্যার ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। তাই ফোনের স্থায়িত্ব বাড়াতে শক্ত কভার ও স্ক্রিন প্রটেক্টর ব্যবহার করা জরুরি। এতে ফোনের ফিজিক্যাল ড্যামেজ প্রতিরোধ করা সম্ভব হয়।
৫. চার্জিং পোর্ট ও স্পিকার পরিষ্কার রাখুন
চার্জিং পোর্ট ও স্পিকারে ধুলো জমে গেলে চার্জ নেওয়ার সমস্যা হতে পারে এবং সাউন্ড কোয়ালিটি নষ্ট হতে পারে। তাই নিয়মিত নরম ব্রাশ বা কটন দিয়ে চার্জিং পোর্ট ও স্পিকার পরিষ্কার করা উচিত। তবে কখনোই ধারালো কিছু দিয়ে পরিষ্কার করা ঠিক নয়, কারণ এতে ফোনের ভেতরের সার্কিট ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
৬. অতিরিক্ত তাপ ও পানির সংস্পর্শ এড়িয়ে চলুন
স্মার্টফোন অতিরিক্ত গরম হয়ে গেলে ব্যাটারির কর্মক্ষমতা কমে যেতে পারে। গরম আবহাওয়ায় দীর্ঘক্ষণ ফোন ব্যবহারের ফলে এটি দ্রুত গরম হয়, যা ব্যাটারির স্থায়িত্ব কমিয়ে দেয়। তাই অপ্রয়োজনীয় অ্যাপ বন্ধ করা, স্ক্রিনের উজ্জ্বলতা কমানো এবং ফোনকে সরাসরি সূর্যের আলো থেকে দূরে রাখা উচিত। যদি ফোন পানিতে পড়ে যায়, তবে সঙ্গে সঙ্গে বন্ধ করে সম্পূর্ণ শুকানোর পর চালু করতে হবে।
৭. ব্যাটারির যত্ন নিন
স্মার্টফোনের ব্যাটারির আয়ু বাড়ানোর জন্য সঠিক চার্জিং অভ্যাস গড়ে তোলা জরুরি। ব্যাটারির চার্জ ২০%-৮০% এর মধ্যে রাখার চেষ্টা করা ভালো। ফাস্ট চার্জিং এড়িয়ে চলা উচিত, কারণ এটি ব্যাটারির দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতি করতে পারে। যদি ফোন দ্রুত চার্জ শেষ হয়ে যায় বা চার্জ দেওয়ার সময় অতিরিক্ত গরম হয়, তবে ব্যাটারি পরিবর্তনের কথা বিবেচনা করা উচিত।
স্মার্টফোনের কার্যক্ষমতা দীর্ঘদিন ভালো রাখতে হলে এই সাধারণ কিন্তু কার্যকর কৌশলগুলো অনুসরণ করা জরুরি। সঠিক ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে আপনার স্মার্টফোনকে দীর্ঘদিন দ্রুতগতির ও কার্যকর রাখুন!
Follow Realme Bangladesh on Facebook.